দলের ছেলেদের দিয়েই সোশ্যাল মিডিয়া চলছে: মহম্মদ সেলিম

দলের ছেলেদের দিয়েই সোশ্যাল মিডিয়া চলছে: মহম্মদ সেলিম

দলের ছেলেদের দিয়েই সোশ্যাল মিডিয়া চলছে: মহম্মদ সেলিম
দলের ছেলেদের দিয়েই সোশ্যাল মিডিয়া চলছে: মহম্মদ সেলিম

অনলাইন ডেস্ক: দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ এমন কিছু নতুন প্রজন্মের ছেলেদের দিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় দলীয় কাজকর্ম হচ্ছে। এমনই জানিয়েছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। তাঁর মতে, ‘অন্যদল ভাড়া করা সৈনিক দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া চালালেও আমাদের দল সে পথে হাঁটতে চায়নি। নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে যখনই যা কিছু নতুন এসেছে বামেরা তা গ্রহণ করেছে।’

তবে এ ক্ষেত্রটা যেহেতু প্রযুক্তি নির্ভর সেহেতু তা কিছুটা প্রথমদিকে দামি ছিল। এখন ডেটা অনেক সস্তা হয়েছে এবং জনগণের কাছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পৌঁছানোটা আরও সহজ হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। ফলে ইদানিং এদিকে নজর বাড়ানো হচ্ছে।

পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন করোনার সংকট তথা লক ডাউনের ফলে এই দিকটায় মাথা ঘামানোর সময় পাওয়া গিয়েছে। কারণ তাঁরা সোশ্যাল ডিসটেন্সের বদলে ফিজিক্যাল ডিসটেন্সের দিকে জোর দিয়ে বরং সামাজিক দিক থেকে নৈকট্য বাড়াতে চেয়েছেন। আর তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখাগুলির গুণগত মান অন্যদের তুলনায় অনেক ভালো বলেই দাবি করেছেন মহম্মদ সেলিম।

সম্প্রতি কৃষি সংস্কারের নাম করে কেন্দ্র কর্পোরেটদের হাতে কৃষকের জমি ও ফসল তুলে দিচ্ছে বলে তার অভিযোগ। দেশজুড়ে কৃষকদের আন্দোলনে প্রধানত পাঞ্জাবের মানুষের মুখ দেখা গেলেও বাংলার মানুষেরা আন্দোলনের মধ্যে রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। দিল্লির কাছে হওয়ায় এই অভিযানে মূলত পার্শ্ববর্তী রাজ্য পাঞ্জাব হরিয়ানা রাজস্থান উত্তর প্রদেশের কৃষকেরা অভিযান করবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছে।

তাছাড়া এই করোনা লকডাউন পরিস্থিতিতে বাংলা থেকে কৃষকদের দিল্লি যাওয়ার অসুবিধা রয়েছে। তবে বাংলার জেলায় জেলায় কৃষকদের আন্দোলন কর্মসূচি দেখা গিয়েছে। কারণ বর্তমানে এরাজ্যে কৃষকেরা আদৌ ভালো নেই। আগে এখানে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটত না, কিন্তু এখন হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

সিপিএমের এই নেতার মতে , কৃষকদের এই আন্দোলন মূলত কর্পোরেট ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে। কৃষি এবং শিল্পের মধ্যে ঠিকমতো ভারসাম্য থাকছে না। কৃষকদের ভূমিকা কমছে উল্টে কর্পোরেট প্রভাব বাড়ছে। ফলের দেশের নীতি প্রণয়নে কৃষকদের তুলনায় কর্পোরেট লবি জোরদার হওয়ায় তাদের স্বার্থে নীতি প্রণয়ন হচ্ছে। তাঁর মতে, তুলা চাষির বদলে টেক্সটাইল লবি অনেক সক্রিয় থাকছে।

এ রাজ্যে পাট চাষিদের অবস্থা খারাপ কিন্তু জুটমিল গুলির মালিকদের নয়, তারা অন্য জায়গায় টাকা খাটাচ্ছে অথচ মিলের আধুনিকরণ করছে না। যদিও জুট মিলের উৎপাদিত পণ্যের ভালোমতো চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া শিল্পজাত পণ্যের দাম ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে অথচ কৃষিজাত পণ্যের দাম বাজার ঠিক করবে বলা হচ্ছে। যেভাবে এগোন হচ্ছে তাতে আদানি আম্বানি সমস্ত চাল-ডাল কিনে নিতে পারবে তখন মানুষ কিভাবে এগুলি পাবে তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।

গত বছর মহারাষ্ট্রের কৃষকেরা লংমার্চ যখন করেছিল তখন রীতিমত মানুষের সহানুভূতি দেখা গিয়েছিল তাদের প্রতি। অথচ তার কিছুদিন বাদে ভোটে কেন তার প্রতিফলন পাওয়া গেল না। এ প্রশ্নের জবাবে মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, ওভাবে সরলীকরণ করা যায় না। পাশাপাশি অবশ্য জানিয়েছেন, ওই সব মানুষকে বিজেপি দুবার ধোকা দেওয়ায় সেটা তারা বুঝেছে।রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সমীকরণ বদলে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গক্রমে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এখন শিবসেনা আকালি দল বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছে। ‌

রাজ্য রাজনীতি প্রসঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথাই বলেছেন মহম্মদ সেলিম। তাঁর মতে, বিজেপি এবং তাদের পুরাতন অথবা ভবিষ্যৎ সঙ্গী সম্পর্কে সম্পর্কে সাবধান থাকতে হবে। ফলে বিজেপি যেমন শত্রু তৃণমূলও তেমন শত্রু।

তৃণমূলকে বন্ধু ভেবে মাওবাদীরা গাড্ডায় পড়েছে বলে তিনি মনে করেন। তাঁর মতে কংগ্রেস তাদের বিরোধী ছিল ঠিকই কিন্তু শত্রু ছিল না। কিন্তু তৃণমূল তাদের শত্রু কারণ ওই দলের জন্মই হয়েছে সিপিএমের বিনাশ করবে এই উদ্দেশ্যে। প্রতিনিধি সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মহম্মদ সেলিমের আলাপচারিতায় ‌এইসব নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১২ ডিসেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply